এবিএনএ : শিশুরা স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর থেকে দেখা যায় অনেক শিশুকে সকালে ঘুম থেকে ওঠানো খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এ নিয়ে বাবা-মা বেশ বিপাকে পড়েন। অনেক শিশু আছে, যারা কিছুতেই ঘুম থেকে ওঠতে চায় না। তবে সকালে ঘুম থেকে ওঠা কিন্তু শুধু অলসতা নয়। জেনে রাখা ভালো- শিশুরা কেন সকালে ঘুম থেকে ওঠতে চায় না এর বেশ কিছু কারণ রয়েছে। মানুষের শরীর একটি যন্ত্রের মতো। কারণ সারা দিন কাজের শেষে আপনাকে কিন্তু অবশ্যই বিশ্রাম নিতে হয়। তাই শিশুদের সকালে ঘুম থেকে ওঠানোর জন্য দরকার কিছু পরিকল্পনা। আসুন জেনে নিই কোনোরকম কান্নাকাটি ছাড়াই শিশুকে ঘুম থেকে ওঠাবেন যেভাবে-
শিশুর পরিপূর্ণ ঘুম
চিকিৎসকরা বলে থাকেন- একজন শিশুর প্রতিদিন অন্তত ১০ ঘণ্টা ঘুমের দরকার হয়। তা হলেই আপনার শিশু সকাল-সকাল ঘুম থেকে ওঠতে পারবে। এ ছাড়া ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার, ঘরে বেশি আলো, খাওয়া-দাওয়া- এসব শিশুর ঘুমকে প্রভাবিত করে। তাই সব কিছু করতে হবে নিয়ম মেনে।
আদর করে বোঝান
শিশুদের সঙ্গে কখনও উত্তেজিত হয়ে কথা বলবেন না। তাদের সঙ্গে আদরের সহিত কথা বলুন আর সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে শিশুকে বোঝান। দেখবেন সে ঠিক বুঝবে। এ ছাড়া অনেক শিশু সকালে দ্রুত ঘুম থেকে ওঠে পড়ে আবার দেরি করে ওঠতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আপনার শিশু কেমন, তা বুঝুন এবং তা মেনে নিয়েই সকালের রুটিন ঠিক করুন।
বিছানায় গড়াগড়ি
শিশু ঘুম ভাঙানোর পরও তাকে কিছু সময় বিছানায় গড়াগড়ি করতে দিন। এতে ঘুম পুরোপুরি কেটে যাবে এবং তাকে বিছানা থেকে ওঠানো সহজ হবে।
বকাবকি
শিশু ঘুম থেকে ওঠতে না চাইলে অনেকেই রাগ করে তাকে বকাবকি করতে থাকেন। এতে দুটি ক্ষতি হয়। সে রাগ করে বিছানাতেই পড়ে থাকে। আর দিনের পর দিন বকা শুনতে শুনতে একসময় সে অভ্যস্ত হয়ে যায়।
গান শুনিয়ে ঘুম ভাঙা
নিজে গান গেয়ে আপনার সন্তানকে ঘুম থেকে ওঠাতে পারেন। অ্যালার্মের চেয়ে তা বেশি কার্যকরী। বাচ্চাকে গান গেয়ে ঘুম পাড়ানোর মতোই গান গেয়ে ঘুম থেকে তুলতে পারেন আপনি। এ ছাড়া নিজে গান গাইতে না চাইলে তার প্রিয় গানটা মোবাইল বা ল্যাপটপে চালিয়ে দিতে পারেন। আর প্রিয় কার্টুন চালিয়ে দিতে পারেন।
মজাদার সুবাসের খাবার রান্না
বাচ্চার প্রিয় খাবারটি রান্না বা বেক করতে পারেন। খাবারের মজাদার সুবাসে সে ঘুম থেকে ওঠে পড়বে এবং তাকে বিছানা থেকে ওঠানো সহজ হবে।
অ্যালার্ম ঘড়ি দিন
অনেক বাড়িতে সবাই একটিই অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করে অথবা যে যার ফোনে অ্যালার্ম দিয়ে রাখে। বাচ্চাকে একটি সুন্দর অ্যালার্ম ঘড়ি কিনে দিন এবং তা কী করে ব্যবহার করতে হয় তা শিখিয়ে দিন। এতে সে সকালে অ্যালার্মের শব্দে ঘুম থেকে ওঠতে উৎসাহ পাবে।
জরুরি সব কিছু রাতেই গুছিয়ে রাখুন
সকালে ওঠে স্কুলে যাওয়ার সময় বই পাওয়া যাচ্ছে না, দুটো জুতার মোজার একটি নেই, পরিষ্কার রুমাল নেই—এসব সমস্যায় পড়েন অনেকেই। এসব জিনিস আগের রাতেই গুছিয়ে রাখলে বাচ্চা সকালে চটপট রেডি হতে পারে। এতে তার সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার উৎসাহও বাড়ে।
রোদ আসে এমন ঘরে শিশুকে রাখুন
অ্যাপার্টমেন্টের অনেক ঘরই এমন হয় যেখানে তেমন একটা আলো-বাতাস আসে না। তেমন ঘরে শিশুকে রাখবেন না। তার ঘরে যেন জানালা দিয়ে বেশ আলো আসে তার দিকে খেয়াল রাখুন। সকালের আলোতেই তার ঘুম ভাঙবে সহজে।